দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র সীমান্ত সংঘর্ষের পর শান্তি আলোচনায় বসেছে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। শনিবার (১৮ অক্টোবর) কাতারের রাজধানী দোহায় এই আলোচনা শুরু হয়। এর আগে শুক্রবার উভয় দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি বাড়িয়ে আলোচনা চলাকালীন পর্যন্ত বহাল রাখার ঘোষণা দেয়।
আলোচনায় আফগান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে আছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ।
আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে জানান, আলোচনায় সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের পাশাপাশি দুই দেশের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিষয়েও আলোচনা হবে। পাকিস্তান পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, আলোচনা মূলত আফগান ভূমি থেকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ এবং সীমান্ত এলাকায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়ে কেন্দ্রীভূত থাকবে।
গত সপ্তাহে সংঘর্ষে দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অন্তত কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হয়, যা ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকলেও উত্তেজনা পুরোপুরি থামেনি। আফগান সরকারের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান আফগান ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে কয়েকজন স্থানীয় ক্রিকেটার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে নভেম্বর মাসে পাকিস্তানে নির্ধারিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেছেন, “আফগান সরকারকে অবশ্যই তাদের মদদপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, যারা আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে।”
অন্যদিকে কাবুল দাবি করেছে, পাকিস্তানই সীমান্ত উত্তেজনা বাড়াতে ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে এবং ইসলামিক স্টেট–সংলগ্ন গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে, যা আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দোহায় আলোচনাটি যদি ইতিবাচক পথে অগ্রসর হয়, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সংকটের অবসান ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স

